হঠাৎ বিএনপির ‘জাতীয় ঐক্য’র আহ্বান নিয়ে নানা মহলে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিকে ক্রান্তিকাল হিসাবে দেখছে বিএনপি। এজন্য এখনই জাতীয় ঐক্য গঠনের উপযুক্ত সময় হিসাবে মনে করছে দলটি। সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে এক ছাতার নিচে আনার চেষ্টা করছেন তারা।
যুগপৎ আন্দোলনে থাকা নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ৩৯ দল ছাড়াও ইসলামী, বাম ও ডানপন্থি আরও ১৫টি দলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রথমে সব দল মিলে একটি যৌথ বিবৃতি দিতে পারে। পরে অভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার কথা ভাবছে বিএনপি। তবে এই ঐক্যের আহ্বান নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে কয়েকটি দলের। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের বিষয়ে বামপন্থি কয়েকটি দল আরও সময় নিতে চাইছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে এসব তথ্য।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানান, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা ঐক্য হয়েই আছে। বৃহত্তর পরিসরে এ ঐক্য গঠনে আগে থেকেই কাজ চলছে। এরমধ্যে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও উদ্ভূত পরিস্থিতি ঐক্য গঠনের সঠিক সময় হিসাবে মনে হয়েছে। এর কারণ হিসাবে নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সমর্থন আছে এবং তারা মাঠেও ছিলেন।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ নানা বিষয়ে সাধারণ মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ এ আন্দোলনকে আরও বেগবান করেছে। নেতারা মনে করেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী নামানোর অর্থ হচ্ছে পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখন আবার বিরোধীদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণত গণতান্ত্রিক দেশের সরকারই সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেয়। দেশের স্বার্থে এটাই হওয়া উচিত।
কিন্তু সরকার তা না করে বিরোধীদের ধরপাকড়সহ নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। এই ক্রান্তিকালে সরকার যেহেতু জাতীয় ঐক্যের কথা ভাবছে না, তাই বড় রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপির দায়িত্ব থেকে ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে। নেতারা আশা করছেন, দেশের স্বার্থে এই আহ্বানে সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দল সাড়া দেবে।