সম্প্রতি ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা গতি পেয়েছে বাংলাদেশে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণায় মূলত বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে ভারতীয় পণ্য বর্জনের জন্য। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে এটা করা হচ্ছে।
মালদ্বীপেও একইভাবে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চলছে। একসঙ্গে এই দুটি প্রচারণা ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিবেশীদের তীব্র ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এরই মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য চীন সফরের খবরে ভারতের মনোযোগ আকৃষ্ট হয়েছে।
এমন ঘটনার প্রেক্ষাপটে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর মঙ্গলবার বলেছেন, প্রতিটি প্রতিবেশীরই সমস্যা আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবারই সবার প্রয়োজন আছে। ইতিহাস ও ভূগোল অত্যন্ত শক্তিশালী শক্তি। তা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না।
এ থেকে বোঝা যায় মালদ্বীপ ও বাংলাদেশ ঐতিহাসিক ও ভৌগলিকভাবে ভারতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বর্তমান ‘ভারতবিরোধী মনোভাব’ বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করবে না।
তবে মজার ব্যাপার হলো জয়শঙ্কর তার সাম্প্রতিক লেখা বই ‘হোয়াই ভারত ম্যাটারস’-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নীতি নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, এই নীতি অত্যন্ত কার্যকর হয়েছে।
কারণ, এই নীতি তার প্রতিবেশীদের প্রতি পারস্পরিক সহযোগিতা ও উদারতা অনুসরণ করে। এর মূলে এটা ভারতের প্রতিবেশীদের দেশটির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার সুবিধাগুলোর উপলব্ধি করার একটি উপায়। তবে ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা এই দাবিতে কিছুটা আঘাত দিয়েছে।
ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ভারতের প্রতি ব্যাপক ভীতি, শত্রুতা এবং বিরোধিতার মনোভাব বিদ্যমান। এই মনোভাবের শিকড় ঐতিহাসিকভাবে অনেক গভীরে। সাম্প্রতিক ভারতবিরোধী মনোভাবে প্রকাশ পেয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ও কূটনীতিতে ভারতের জোরালো হস্তক্ষেপের প্রতি বিরক্তি ও বিরোধিতা থেকে। মোদি সরকারের ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নীতির অধীনে প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ও কূটনৈতিক বিষয়ে অধিক পরিমাণে গভীরভাবে যুক্ত হয়েছে ভারত।
এসব দেশের ভিতরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং ধর্মীয় গ্রুপগুলোকে প্রভাবিত করে এবং এসব দেশের অভ্যন্তরে জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলোকে দমন করে ভারতপন্থি শক্তির প্রতি সমর্থন দিয়েছে।